বিডিটাইম ডেস্ক
গাজার দিকে যাওয়া আন্তর্জাতিক ত্রাণবাহী জাহাজ ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের (এফএফসি) প্রবেশে বাধা দেওয়ার হুমকি দিয়েছে ইসরায়েল।
মঙ্গলবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফরিন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “ইসরায়েলের সামুদ্রিক অঞ্চল ও সমুদ্রসীমা রক্ষার জন্য নৌবাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।” তবে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।
গত রোববার ইতালির সিসিলি দ্বীপ থেকে এফএফসির ত্রাণবাহী জাহাজ ম্যাডলানে চড়ে গাজার উদ্দেশে যাত্রা করেন সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ ১১ জন মানবাধিকারকর্মী। এফএফসি আশা করছে, শনিবারের মধ্যেই জাহাজটি গাজা উপকূলে পৌঁছাবে। জাহাজটিতে ফলের রস, দুধ, চাল, টিনজাত ও আমিষজাত খাবার রয়েছে।
ইসরায়েলের দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় ত্রাণ প্রবেশে বাধা দেওয়ায় সেখানে ভয়াবহ মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ওষুধ, খাবার ও পানি ঘাটতির পাশাপাশি খাদ্যসংকট চরমে পৌঁছেছে। এই প্রেক্ষাপটেই এফএফসি নতুন করে সমুদ্রপথে ত্রাণ পাঠানোর উদ্যোগ নেয়।
এফএফসি ২০১০ সালেও একই রকম উদ্যোগ নিয়েছিল। সে সময় তুরস্ক থেকে গাজার উদ্দেশে যাওয়া মাভি মারমারা জাহাজে ইসরায়েলি হামলায় ১০ জন নিহত ও ২৮ জন আহত হন। এবারও নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন সংগঠনটির নেতারা। এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া বিবৃতিতে তারা লেখে, “আমরা একসঙ্গে গাজার জন্য একটি সামুদ্রিক করিডর খুলে দিতে পারি।”
গত মাসেও মাল্টার উপকূলবর্তী আন্তর্জাতিক জলসীমায় ফ্লোটিলার আরেকটি জাহাজে ড্রোন হামলা হয়েছিল, যার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করা হয়।
জিএইচএফের ত্রাণ কার্যক্রম স্থগিত
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল পরিচালিত বিতর্কিত সংস্থা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) গাজায় তাদের সব ত্রাণ বিতরণকেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে। বুধবার এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ত্রাণকেন্দ্রের পথগুলো এখন ‘যুদ্ধক্ষেত্র’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সম্প্রতি এসব কেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি হামলায় শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হন। জাতিসংঘ এ প্রাণহানির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
গাজা সরকারের তথ্য অনুযায়ী, মাত্র আট দিনের মধ্যে ত্রাণ নিতে গিয়ে ইসরায়েলি হামলায় ১০২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আজ বুধবারও বিমান হামলায় অন্তত ১৬ জন নিহত হয়।
জাতিসংঘে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব
গাজায় যুদ্ধবিরতি ও ত্রাণ সহায়তা নিশ্চিত করতে আজ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এতে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দিতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
গাজায় ৬০০ দিন ধরে চলমান সংঘাতে হাজারো প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যে এই মানবিক তৎপরতা নতুন করে আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।