লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতা কাউছার আহম্মদ মিলনের (৬০) মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। নিহতের পরিবারের করা মামলায় বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ১২ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ ৩২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় একদিকে জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ, অন্যদিকে বিএনপির পাল্টা ব্যাখ্যা—সাম্প্রতিক রাজনীতিতে বিষয়টি নতুন মাত্রা তৈরি করেছে।
গত বৃহস্পতিবার ঈদুল আজহার আগে সকালে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের রাজিবপুরে দুপক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে জামায়াতের ওলামা বিভাগের নেতা মাওলানা কাউছার আহম্মদ মিলন গুরুতর আহত হন। পরে সন্ধ্যায় তিনি মারা যান।
রবিবার (৮ জুন) সন্ধ্যায় নিহতের স্ত্রী শিল্পি আক্তার সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মোট ৩২ জনকে আসামি করা হয়।
জামায়াত এ ঘটনাকে তাদের দলের নেতার ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে দাবি করছে। এর প্রতিবাদে সোমবার দুপুর ১২টায় শহরের আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে জেলা জামায়াত। বৃষ্টি উপেক্ষা করেও মিছিলটি উত্তর তেহমুনীতে গিয়ে শেষ হয়।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ড. রেজাউল করিম বলেন, “আমাদের নেতাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।” জেলা জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসাইন নুরনবীসহ অন্যান্য নেতারাও বক্তব্য রাখেন।
অন্যদিকে জেলা বিএনপি বলছে, ঘটনাটি সামাজিক অবক্ষয়ের বহিঃপ্রকাশ, এর সঙ্গে দলীয় রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। তারা দাবি করছে, চুরি ও মাদক নিয়ে স্থানীয় দুই পক্ষের বিরোধ থেকে মারামারির ঘটনা ঘটে এবং পরে মাওলানা কাউছার মারা যান।
সোমবার সকালে জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, দলের যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি এবং জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাবুদ্দিন সাবু বলেন, “প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট অনুযায়ী এটি একটি স্বাভাবিক মৃত্যু। আমরা রাজনৈতিক সহাবস্থানে বিশ্বাসী এবং এই ঘটনা নিয়ে সামাজিক বা আইনগত উপায়ে সমাধান চাই।”
স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এই ঘটনায় জামায়াত ও বিএনপির মধ্যে একসময়কার ২০ দলীয় জোটের ছায়া সম্পর্ক আরও দুর্বল হতে পারে। বিষয়টি রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন তারা।