বিডিটাইম ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নীতির কড়াকড়ির কারণে ফের বিতর্কের মুখে পড়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এবারে ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযানের প্রেক্ষিতে সেনা মোতায়েন করে রাজ্যীয় ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গভর্নর গ্যাভিন নিউসম ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে ‘স্বৈরাচারী’ আখ্যা দিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।
শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ মঙ্গলবার পর্যন্ত পঞ্চম দিনে গড়ায়। মূলত অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান ও ধরপাকড়ের প্রতিবাদে লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভ শুরু হয়, যা পরে সহিংসতায় রূপ নেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ট্রাম্প শহরটিতে ৪ হাজার ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের ঘোষণা দেন। শুধু তাই নয়, ৭০০ মেরিন সেনা মোতায়েনেরও নির্দেশ দেন তিনি। এর মধ্যে সোমবার পর্যন্ত আরও ২ হাজার গার্ড মোতায়েনের তথ্য নিশ্চিত করেন গভর্নর নিউসম।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ১৯৬৫ সালের পর এই প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট রাজ্যের গভর্নরের সম্মতি ছাড়াই ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করলেন। গভর্নর নিউসম এই পদক্ষেপের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সোমবার সান ফ্রান্সিসকোর ফেডারেল আদালতে মামলা করেছেন। বিবাদী হিসেবে আনা হয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এবং মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগকে।
মামলার অভিযোগপত্র অনুযায়ী, সেনা মোতায়েনের মাধ্যমে ক্যালিফোর্নিয়ার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘিত হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান ও ফেডারেল আইনের সীমা অতিক্রম করা হয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল রব বন্টা বলেন, “ট্রাম্পের পদক্ষেপ রাজ্যের ওপর কেন্দ্রীয় চাপ প্রয়োগের একটি বেআইনি প্রচেষ্টা। আদালতের মাধ্যমে আমরা এই পদক্ষেপকে বাতিল করতে চাই।”
এদিকে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযানের প্রতিবাদে লস অ্যাঞ্জেলেস ছাড়িয়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে টেক্সাস, বোস্টন, হিউস্টন, ফিলাডেলফিয়া, নিউ ইয়র্ক, শিকাগো, ডালাস ও আটলান্টাতেও। লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ বিভাগের তথ্যমতে, বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ৬০০টিরও বেশি রাবার বুলেট ছোড়া হয়েছে।
শুক্রবার আন্দোলনের সূচনার পর থেকেই অভিবাসীদের ধরপাকড় শুরু হয়। প্রথম দিনে ৪৪ জনকে কর্মস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। লস অ্যাঞ্জেলেস থেকেই আরও ৭৭ জনকে আটক করা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, লুটপাট, ভাঙচুরসহ নানা অভিযোগ আনা হয়েছে।
শনিবার রাতে বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায়ে ২৯ জন, রোববার আরও ২৭ জন এবং সান ফ্রান্সিসকোতে ৬০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে এবং ট্রাম্পের পদক্ষেপ ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে চলছে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক।