বিডিটাইম ডেস্ক
প্রবাসী আয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। ২০২৪–২৫ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে দেশে এসেছে ২৮২ কোটি ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি। এ প্রবাহের মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো এক অর্থবছরে ৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। একই সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে জুন শেষে দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলারে, যা গত ২৮ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, ২০২৪–২৫ অর্থবছরে বৈধ চ্যানেলে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন মোট ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৩৩ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরে এই অঙ্ক ছিল ২ হাজার ৩৯১ কোটি ডলার। অর্থাৎ রেমিট্যান্স বেড়েছে ৬৪১ কোটি ডলার বা ২৬ দশমিক ৮২ শতাংশ।
বিশ্লেষকদের মতে, হুন্ডি প্রতিরোধে সরকারের কঠোর অবস্থান, পাচারকারীদের ওপর চাপ এবং দুর্নীতিবিরোধী তদন্ত কার্যক্রমের কারণে প্রবাসীরা বৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠাতে উৎসাহিত হচ্ছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, চলতি জুন মাসে প্রাপ্ত রেমিট্যান্স একক মাস হিসেবে তৃতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে গত মার্চে সর্বোচ্চ ৩৩০ কোটি ডলার এবং মে মাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯৭ কোটি ডলার এসেছিল। ঈদের আগে টানা ১০ দিন ব্যাংক বন্ধ থাকলেও জুনে রেমিট্যান্স প্রবাহে কোনো ভাটা পড়েনি।
এছাড়া রেমিট্যান্সের পাশাপাশি রপ্তানি আয়ে ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর (বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি ইত্যাদি) কাছ থেকে প্রাপ্ত ৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণ রিজার্ভ বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, জুন শেষে গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩১.৬৮ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৩ সালের মার্চের পর সর্বোচ্চ। আইএমএফের বিপিএম৬ মানদণ্ড অনুযায়ী (যেখানে ইডিএফসহ বিভিন্ন তহবিলে দেওয়া ঋণ বাদ দেওয়া হয়) রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৬.৬৬ বিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের আগস্টে ২০.৪৮ বিলিয়ন ডলারে নেমে গিয়েছিল।
২০২১ সালের আগস্টে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল। তবে পরবর্তী সময়ে ব্যাপক অর্থপাচার ও আমদানি চাপে তা ধীরে ধীরে কমে যায়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক পরিবর্তন ও প্রশাসনিক নজরদারির কারণে বৈদেশিক অর্থপ্রবাহে ইতিবাচক সাড়া দেখা যাচ্ছে। তবে এই ধারা ধরে রাখতে হলে রেমিট্যান্স ব্যবস্থায় প্রণোদনা ও সহজতর প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা জরুরি।