বিডিটাইম ডেস্ক
“ভোটের মাধ্যমে যেন আমরা সৎ ও যোগ্য লোককে নির্বাচিত করতে পারি”—জামায়াতে ইসলামীর একটি অনুষ্ঠানে পুলিশের পোশাকে দাঁড়িয়ে দেওয়া এই বক্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ঢাকা মহানগর পুলিশের লালবাগ বিভাগের সহকারী কমিশনার (পেট্রোল) শাহ আলম বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) জামায়াতের আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন।
রাজধানীর আজিমপুরে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য নূরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা-৭ আসনের জামায়াত প্রার্থী হাজী এনায়েত উল্লাহসহ স্থানীয় নেতারা। আয়োজকরা জুলাই-আগস্টের কথিত ‘গণঅভ্যুত্থান’-এর বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এতিম শিশুদের খাবার বিতরণ করেন। এর আগে আয়োজিত আলোচনাসভায় পুলিশ কর্মকর্তা শাহ আলমকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়।
বক্তব্যে তিনি বলেন,“আগের ফ্যাসিস্ট সরকার পুরো দেশ বিক্রি করে দিয়েছে— এটা আপনারা জানেন। এখন একটা সুযোগ এসেছে দেশের জন্য কাজ করার। আমরা পুলিশ, আমাদের জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে হবে। ভোটের মাধ্যমে যেন আমরা সৎ ও যোগ্য লোককে নির্বাচিত করতে পারি, আমরা সেটা চাই।”
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে বলছেন, সরকারি চাকরিবিধি অনুযায়ী একজন কর্মকর্তা কোনো রাজনৈতিক দলের মঞ্চে গিয়ে এভাবে বক্তব্য দিতে পারেন না। এটা একটি গুরুতর ব্যত্যয়, যা প্রশাসনিক আচরণবিধির লঙ্ঘন বলেও দাবি করা হয়।
তবে এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার শাহ আলম বলেছেন,“আমি পেশাগত দায়িত্বে গিয়ে বক্তব্য দিতে বাধ্য হই। সেখানে আমি এতিম শিশুদের উদ্দেশে মানবিক কিছু কথা বলেছি। বক্তব্যের একটি অংশকে খণ্ডিতভাবে ছড়িয়ে রাজনৈতিক রূপ দেওয়া হচ্ছে। আমি কারো হয়ে প্রচারণা চালাইনি।”
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য না করলেও একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, **“বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
বিশ্লেষকদের মতে, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে এমন ঘটনায় সাধারণ মানুষের আস্থায় ধস নামতে পারে। রাজনৈতিক সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি ও অংশগ্রহণ নিয়ে স্বচ্ছ ব্যাখ্যা না দিলে বিষয়টি আরও বিতর্কিত হয়ে উঠবে।