Top 5 This Week

ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রে ইসরায়েলের পাঁচটি সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত, দাবি ‘দ্য টেলিগ্রাফ’-এর

বিডিটাইম ডেস্ক

চলমান যুদ্ধের মধ্যে ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের অন্তত পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটিতে সরাসরি আঘাত হেনেছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ। উপগ্রহ থেকে পাওয়া রাডারচিত্র বিশ্লেষণ করে যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটির একদল গবেষকের মাধ্যমে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

তবে এখন পর্যন্ত এসব হামলার কথা ইসরায়েল সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি। দেশটির সেনাবাহিনীর (আইডিএফ) কঠোর সেন্সর নীতির কারণে ইসরায়েলি কোনো সংবাদমাধ্যমও এ নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলছে না।

রাডার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, উত্তর, দক্ষিণ ও মধ্য ইসরায়েলের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনায় ইরানের ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানে। এই ঘাঁটিগুলোর মধ্যে রয়েছে একটি বড় বিমানঘাঁটি, একটি লজিস্টিক ঘাঁটি এবং একটি গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ কেন্দ্র। এসব হামলার তথ্য এতদিন প্রকাশ্যে আসেনি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব ঘাঁটি ইসরায়েলের সামরিক সক্ষমতার মূলভিত্তি। লজিস্টিক ঘাঁটি মূলত যুদ্ধ পরিচালনার জন্য অস্ত্র, জ্বালানি, যানবাহন ও সরঞ্জাম সরবরাহের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

পাঁচটি সামরিক ঘাঁটির বাইরে আরও ৩৬টি স্থানে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতের তথ্য পাওয়া গেছে। আবাসিক ভবন, শিল্প এলাকা ও বেসামরিক অবকাঠামোতে এসব হামলায় বেশ ক্ষয়ক্ষতি হলেও নিহত হয়েছে মাত্র ২৮ জন। এই তুলনামূলক কম প্রাণহানির পেছনে রয়েছে ইসরায়েলের উন্নত সতর্কতাব্যবস্থা এবং সাধারণ মানুষের শেল্টার ব্যবহারের অভ্যাস।

বিশ্লেষকদের দাবি, যুদ্ধের শুরুতে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের অধিকাংশই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ধরা পড়লেও পরবর্তী দিনগুলোতে এই অনুপাত কমে আসে। প্রতিহত হওয়া ক্ষেপণাস্ত্রের হার কমে গিয়ে সফল আঘাতের সংখ্যা বাড়তে থাকে।

বিশেষজ্ঞদের ভাষায়, এর কারণ হতে পারে ইরানের নতুন প্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্র ও কৌশলগত উৎক্ষেপণ পদ্ধতি। আর ইসরায়েল হয়তো সীমিত সংখ্যক ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্রকে হিসেব করে ব্যবহার করছিল।

যুদ্ধ চলাকালে ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় সরাসরি সহায়তা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। থাড (THAAD) সিস্টেম এবং লোহিত সাগরে থাকা মার্কিন যুদ্ধজাহাজ থেকে অন্তত ৩৬টি ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেপণাস্ত্রের দাম প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ ডলার।

ইসরায়েলের সরকার ও সেনাবাহিনী জনগণকে সতর্ক করে বলছে, উন্নত প্রযুক্তি থাকলেও আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ‘সম্পূর্ণ নিরাপত্তা’ দিতে সক্ষম নয়। বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, এই যুদ্ধে ইসরায়েলের ‘আয়রন ডোম’-এর উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা এখন নতুন করে মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

১২ দিনের এই যুদ্ধে ইরান ও ইসরায়েল দুই পক্ষই নিজেদের বিজয়ী দাবি করছে। তবে এই নতুন তথ্য সামনে আসায় কথার লড়াইয়ের পাশাপাশি সামরিক উত্তেজনাও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles

en_USEnglish