বিডিটাইম ডেস্ক
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে এক বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক (বর্তমানে বহিষ্কৃত) মো. ফয়সাল আহমেদ দুর্জয়কে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে এ ঘটনাকে ‘সম্পূর্ণ সাজানো নাটক’ দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন দুর্জয়ের মা মোছা. খাদিজা আক্তার। তিনি তার ছেলের নিঃশর্ত মুক্তি ও প্রকৃত ঘটনা তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
পুলিশ ও মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, ২৯ এপ্রিল বিকেলে দুর্গাপুর উপজেলার তেলুঞ্জিয়া এলাকার একটি রিসোর্ট থেকে তরুণীসহ ফয়সাল আহমেদ দুর্জয়, তার বন্ধু জেলা ছাত্রলীগ নেতা আবিদ হাসান মুন্না মিয়া এবং রিসোর্টের ম্যানেজার পিষুষ দেবনাথকে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পরে ওই রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণী ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। এজাহারে একমাত্র আসামি করা হয় দুর্জয়কে। ৩০ এপ্রিল দুর্জয়কে নেত্রকোণা জেলা আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুর্গাপুর প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দুর্জয়ের মা মোছা. খাদিজা আক্তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, “আমার ছেলে দীর্ঘদিন ধরে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা ধর্ষণ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। বন্ধুত্বের ছলে কিছু ব্যক্তি তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলে তাকে ফাঁদে ফেলেছে।”
তিনি আরও দাবি করেন, “যে মেয়েটি ধর্ষণের অভিযোগ এনেছে, তার চরিত্র প্রশ্নবিদ্ধ। তার বিভিন্ন স্থিরচিত্র ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রকৃতপক্ষে ওই তরুণী ও ছাত্রলীগ নেতা মুন্না মিয়া রিসোর্টে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে অবস্থান করছিলেন। পরে ঘটনা ফাঁস হলে পুলিশ রিসোর্ট থেকে তাদের উদ্ধার করে। কিন্তু মূল অভিযুক্তকে আড়াল করতে পুলিশ আমার ছেলেকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসায়।”
সংবাদ সম্মেলনে তিনি থানার ওসি মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে উৎকোচ নিয়ে মামলার প্রকৃতি পরিবর্তনের অভিযোগ এনে বলেন, “উৎকোচের বিনিময়ে ওসি প্রকৃত ধর্ষণকারী ছাত্রলীগ নেতাকে বাঁচিয়ে আমার ছেলেকে আসামি করেছে। এটা একটি ষড়যন্ত্র। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”
এ সময় দুর্জয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে মোবারক হোসেন, হুমায়ুন কবীর, নাইমুর রহমান ও আল আমীন উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, “ঘটনাটি একেবারেই সত্য। আমি অভিযুক্ত বা ভুক্তভোগী কাউকেই পূর্ব থেকে চিনতাম না। পুলিশের বিরুদ্ধে উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মামলা তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত প্রক্রিয়া মেনেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
উল্লেখ্য, মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, অভিযোগের বিষয়ে প্রমাণসাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।