বিডিটাইম ডেস্ক
সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত ব্যক্তি বা সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার বিধান যুক্ত করে **সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এতে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বা সত্তা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে সরকারের প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে তার সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা যাবে।
এর ফলে আওয়ামী লীগের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সে অনুযায়ী যেকোনো সময় প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে।
রোববার রাতে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন সাপেক্ষে অধ্যাদেশটি জারি করা হয়। এর আগে বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়।
কী আছে নতুন অধ্যাদেশে?
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, কোনো সন্ত্রাসী সত্তার পক্ষ, পক্ষে বা সমর্থনে প্রকাশনা, বিবৃতি, প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশ, সংবাদ সম্মেলন বা জনসম্মুখে বক্তৃতা দেওয়া নিষিদ্ধ করা যাবে।
এতে ‘সত্তা’ বলতে কোনো সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, বাণিজ্যিক বা অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, গোষ্ঠী, সমিতি, রাজনৈতিক দল বা এ ধরনের যেকোনো সংগঠনকে বোঝানো হয়েছে।
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধে প্রস্তুতি
গত শনিবার অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠকে আওয়ামী লীগের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব এবং জুলাই আন্দোলনের নেতা-কর্মী ও সাক্ষীদের নিরাপত্তার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “নিষিদ্ধ ঘোষণার প্রজ্ঞাপন জারির পর আওয়ামী লীগের ওয়েবসাইট, ফেসবুক, ইউটিউব চ্যানেলসহ সব অনলাইন মাধ্যম বিটিআরসির মাধ্যমে বন্ধ করে দেওয়া হবে।”
দলকে শাস্তির বিধান যুক্ত
একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন সংশোধন করে নতুন অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। এতে ট্রাইব্যুনালকে কোনো রাজনৈতিক দল বা সংগঠনকে শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, সংগঠন যদি যুদ্ধাপরাধের মতো অপরাধ সংঘটনে সহায়তা, নির্দেশ, মদদ বা ষড়যন্ত্র করে, তবে ট্রাইব্যুনাল তার কার্যক্রম স্থগিত বা নিষিদ্ধ, নিবন্ধন বাতিল এবং সম্পত্তি জব্দ করতে পারবে।
প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম বলেন, “এটি একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ। ট্রাইব্যুনালের মতো আন্তর্জাতিক মানের আইনের আওতায় সংগঠনের বিচার হলে তা জনগণের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য হবে।”
জুলাই ঘোষণাপত্র আসছে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র তৈরির লক্ষ্যে জানুয়ারি থেকে কাজ শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। শনিবারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে এই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করে জুন মাসেই প্রকাশ করা হবে।