বিডিটা্ইম ডেস্ক
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কামাল আকবর এবং কোষাধ্যক্ষ ওয়াকার আহমেদের অপসারণের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন শহীদ ও আহতদের পরিবার। সোমবার (১২ মে) দুপুরে ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ের সামনে এই কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
মানববন্ধনে শহীদ সায়েমের মা শিউলি আক্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমার ছেলের জীবন কেড়ে নেওয়া স্বৈরাচারীদের লোকজন কিভাবে ফাউন্ডেশনে বসে? শহীদ পরিবারের যন্ত্রণার ভাষা আমরা বুঝি, কিন্তু ওরা কখনো বুঝবে না। আমাদের একটাই দাবি—ওনাকে (সিইও) আমরা এখানে চাই না। আমাদের পরিবার থেকেই যোগ্য কাউকে দায়িত্বে আনুন।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই ফাউন্ডেশন যদি শহীদদের ও আহতদের জন্য হয়, তাহলে কেন বাইরের, স্বৈরাচার-সংশ্লিষ্ট লোকজন সেখানে পদ পাবে?”
শহীদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম, এই সরকার আমাদের সন্তানদের ন্যায়বিচার দেবে। কিন্তু এখনো বিচার শুরু হয়নি, কোনো অগ্রগতি নেই। যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে আমরা সচিবালয় ঘেরাও করব।”
তিনি উপদেষ্টাদের উদ্দেশ করে বলেন,“আপনারা বিলাসী জীবন ছেড়ে শহীদদের বিচার নিয়ে ভাবুন। আজ আমরা রাস্তায়, আপনাদের লজ্জা থাকা উচিত।”
শহীদ শিশু জাবির ইব্রাহিমের বাবা কবির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, “৮ মে যমুনা গেস্ট হাউস থেকে বের হওয়ার সময় ফাউন্ডেশনের কোষাধ্যক্ষ ওয়াকার আহমেদ শহীদ ইয়ামিনের বাবাকে ‘পাগল’ ও ‘ননসেন্স’ বলেছে। একজন শহীদ পিতার সঙ্গে এমন আচরণ মেনে নেওয়া যায় না। আমরা তার পদত্যাগ চাই।”
শহীদ ফাহমিন জাফরের মা কাজী লুলুল মাখমিন বলেন,“যাঁদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে ফাউন্ডেশনটি গঠিত, আজ তাঁরাই অবমূল্যায়িত। ফাউন্ডেশনের সব গুরুত্বপূর্ণ পদে শহীদ পরিবারের সদস্যদেরই নিয়োগ দিতে হবে।”
এর আগে, ৮ মে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে সাবেক সিইও মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ পদত্যাগ করেন এবং নতুন সিইও হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল কামাল আকবরের নাম ঘোষণা করা হয়।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন শহীদ নাফিসের বাবা গোলাম রহমান, শহীদ শাহরিয়ার হাসান আলভির বাবা আবুল হাসান, শহীদ ইয়ামিনের বাবা মো. মহিউদ্দিন, শহীদ ইমাম হাসান তায়িমের ভাই রবিউল আউয়াল ভূঁইয়া ও শহীদ রমিজ উদ্দিন আহমেদের বাবা রকিবুল ইসলামসহ অনেকেই।
বক্তারা বলেন, ফাউন্ডেশনের নেতৃত্ব শহীদ পরিবারের হাতে ফিরিয়ে না দিলে আন্দোলন আরও কঠোর হবে।