Top 5 This Week

March for Gaza’-এ গাজাবাসীর প্রতি সংহতি জানিয়ে ঘোষণাপত্র পাঠ

Spread the love

বিডিটাইম ডেস্ক:

গাজায় চলমান গণহত্যা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবাদী কণ্ঠ তুলে ধরতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো ‘March for Gaza’ শীর্ষক বিশাল পদযাত্রা ও গণসমাবেশ। আয়োজক সংগঠন প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট, বাংলাদেশ এ সময় গাজার জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে একটি বিস্তারিত ঘোষণাপত্র ও অঙ্গীকারনামা প্রকাশ করে।

ঘোষণাপত্র পাঠ করেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। এতে চারটি মূল স্তরে দাবি ও প্রত্যয় তুলে ধরা হয়—(১) আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি, (২) মুসলিম উম্মাহ ও ওআইসির প্রতি, (৩) বাংলাদেশের সরকারের প্রতি এবং (৪) আমাদের নিজেদের প্রতি।

১. আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি দাবি:

গাজার রক্তপাতকে আন্তর্জাতিক ব্যর্থতা হিসেবে আখ্যায়িত করে বলা হয়, জাতিসংঘ ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে আর নির্লিপ্ত থাকা চলবে না।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
“যুদ্ধবিরতি” নয়—“গণহত্যা বন্ধে” দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে।
পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি ও ১৯৬৭-পূর্ব সীমান্তে ফেরত যাওয়ার দাবি জানানো হয়।

২. মুসলিম উম্মাহ ও ওআইসির প্রতি আহ্বান:

ঘোষণাপত্রে বলা হয়: “ফিলিস্তিন কেবল একটি ভূখণ্ড নয়, এটি উম্মাহর আত্মপরিচয়ের অংশ।”

মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর প্রতি ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক, সামরিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন করার আহ্বান জানানো হয়।

গাজার জনগণের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে ত্রাণ, চিকিৎসা ও প্রতিরক্ষা সহায়তা পাঠানোর আহ্বান জানানো হয়।

ভারতের হিন্দুত্ববাদী শাসনব্যবস্থার অধীনে মুসলিমদের ধর্মীয় অধিকার খর্বের বিরুদ্ধে ওআইসির কার্যকর ভূমিকার দাবি করা হয়।

৩. বাংলাদেশের সরকারের প্রতি ছয় দফা দাবি:
“Except Israel” শর্ত পুনর্বহাল করে ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের রাষ্ট্রীয় চুক্তি বাতিল করা।

গাজার জন্য সরাসরি রাষ্ট্রীয় ত্রাণ সহায়তা প্রেরণ।

শিক্ষা পাঠ্যক্রমে আল-আকসা, ফিলিস্তিনের সংগ্রাম এবং উম্মাহর ঐতিহাসিক আত্মত্যাগের ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত করা।

ইসরায়েলপন্থী বা জায়নিস্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্য আমদানি ও প্রচার বন্ধে সরকারি নির্দেশনা জারি করা।

ভারতের মুসলিমবিরোধী পদক্ষেপের প্রতিবাদে কূটনৈতিক অবস্থান গ্রহণ।

জাতীয়ভাবে ফিলিস্তিন সংহতির দিবস পালনের প্রস্তাব।

৪. নিজেদের প্রতি উচ্চারিত অঙ্গীকার:
ইসরায়েলি স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোম্পানির পণ্য বর্জনের সিদ্ধান্ত।

আত্মমর্যাদাশীল, ইতিহাসসচেতন প্রজন্ম গঠনের প্রতিশ্রুতি।

মুসলিম ঐক্য, প্রতিবাদ ও জাগরণের চেতনা ঘরে ঘরে ছড়িয়ে দেওয়ার সংকল্প।

ভাষা, সংস্কৃতি, শিক্ষা ও অর্থনীতিতে স্বাধীনতা ও আত্মপরিচয়ের চর্চা অব্যাহত রাখার ঘোষণা।

গাজার শহীদদের নাম উল্লেখ করে শ্রদ্ধা:

সমাবেশে গাজার শহীদদের স্মরণে দো‘আ করা হয়। ঘোষণাপত্রে নাম নিয়ে উল্লেখ করা হয়—শিশু শহীদ হিন্দ রজব, রীম, ফাদি আবু সালেহসহ আরও অনেকের নাম। তাদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সমবেত কণ্ঠে বলা হয়:
“আমরা, বাংলাদেশের মানুষ—শাহ জালাল ও শরীয়তুল্লাহর ভূমি থেকে দাঁড়িয়ে, আপনাদের সালাম জানাই।”

ঘোষণাপত্রটি শেষ হয় এই প্রার্থনায়:
“হে আল্লাহ, গাজার এই সাহসী জনপদকে তুমি সেই পাথর বানিয়ে দাও, যার উপর গিয়ে ভেঙে পড়বে জায়োনিস্টদের সব ষড়যন্ত্র।”
এইভাবে গাজার শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে বাংলাদেশের স্পষ্ট অবস্থান পুনরায় উচ্চারিত হলো ঢাকার রাজপথ থেকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles

en_USEnglish