Top 5 This Week

গাজায় ত্রাণ যেন ‘মৃত্যুফাঁদ’, ইসরায়েলি গুলিতে নিহত ৫৪৯

বিডিটাইম ডেস্ক

গাজা উপত্যকায় টানা অবরোধ ও দমনপীড়নের মধ্যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে ত্রাণ নিতে যাওয়া শত শত ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটছে। বিতর্কিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ)-এর ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে গত চার সপ্তাহে নিহত হয়েছেন অন্তত ৫৪৯ ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও ৪ হাজারের বেশি এবং নিখোঁজ রয়েছেন ৩৯ জন। গাজার প্রশাসন এসব কেন্দ্রকে আখ্যা দিয়েছে ‘মৃত্যুফাঁদ’ হিসেবে।

বৃহস্পতিবার(২৬জুন) আলজাজিরা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার বরাতে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মদদে পরিচালিত জিএইচএফ প্রকৃত ত্রাণ সরবরাহের চেয়ে গাজাবাসীর ওপর রাজনৈতিক ও সামরিক নিয়ন্ত্রণ কায়েমের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে।

গাজার স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, গুলিতে হতাহতদের অনেকেই নারী ও শিশু। জাতিসংঘ, ইউনিসেফ ও সেভ দ্য চিলড্রেনসহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা এই কেন্দ্রগুলোতে শিশু হত্যার অভিযোগ তুলেছে। সেভ দ্য চিলড্রেন জানায়, অন্তত ১০টি প্রাণঘাতী হামলায় অধিকাংশ হতাহতই শিশু।

ইসরায়েল প্রায় চার মাস ধরে গাজায় ত্রাণ সহায়তা প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। মাঝে মধ্যে সীমিতসংখ্যক ট্রাক প্রবেশের অনুমতি মিললেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অতি সামান্য। খাদ্য, পানি, ওষুধ ও বিদ্যুতের ঘাটতির কারণে উপত্যকাটি এখন ধুঁকছে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে।
ইউএনআরডব্লিউএ জানায়, পানির সরবরাহ ব্যবস্থাও কার্যত ধ্বংস হয়ে গেছে। ত্রাণকর্মীরাও পড়েছেন তৃষ্ণার ঝুঁকিতে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় হামলা আরও জোরদার করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৯০ জন, যাদের অনেকেই ত্রাণ সহায়তার আশায় কেন্দ্রে উপস্থিত ছিলেন। বুধবার নিহত হয় ৪৫ জন। গত অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া অভিযানে গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৬ হাজার ১৫৭ জন।

এদিকে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গাভির নতুন করে গাজায় সব ধরনের মানবিক সহায়তা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান-ইসরায়েল সাময়িক যুদ্ধবিরতির সুযোগে ইসরায়েলের নজর আবার পুরোপুরি গাজার ওপর।

গাজায় নতুন যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি নিয়ে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতা চললেও এখনও কোনো কার্যকর চুক্তির খোঁজ মেলেনি। হামাস জানায়, তারা কোনো ‘বাস্তব প্রস্তাব’ পায়নি। ট্রাম্প দাবি করলেও ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছেন, আলোচনায় অগ্রগতি নেই।

জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো এ পরিস্থিতিকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তবে ইসরায়েলি সরকার এখনো কোনো আন্তর্জাতিক তদন্তে রাজি হয়নি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles

en_USEnglish