বিডিটাইম ডেস্ক
রাজনৈতিক সংস্কার ও নির্বাচনসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় আলোচনা শুরু করবে ঐকমত্য কমিশন। আগামী জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে এই আলোচনা শুরু হবে বলে সোমবার (২৬ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক সভায় জানানো হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সভায় কমিশনের সদস্যরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম দফার আলোচনার অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। আলোচনার পরবর্তী ধাপ নিয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা হয় সভায়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “জনগণকে নির্বাচনমুখী করতে হবে। কেউ যেন ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নিতে না পারে, সে বিষয়ে নাগরিকদের সচেতন করতে হবে। শৃঙ্খলা আনতে হবে, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নিরাপদ ভোটের আয়োজন করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “এত বড় অভ্যুত্থানের পর যে বাংলাদেশ আমরা পেয়েছিলাম, তা যেন তেমনই বাংলাদেশ থাকে।”
সভায় রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি নাগরিক সমাজ ও তৃণমূল সংগঠনগুলোকেও সংস্কার প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করে জনসচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এছাড়াও অতীতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অনিয়মে জড়িতদের চিহ্নিত করতে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের বিষয়ে আলোচনা হয়। ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, এই প্রস্তাবের প্রতি ইতোমধ্যেই সব রাজনৈতিক দল একমত পোষণ করেছে।
কমিশনের সদস্য আইয়ুব মিয়া অবিলম্বে জনপ্রশাসন সংস্কার বাস্তবায়ন কমিশন গঠনের দাবি জানান। তিনি বলেন, “১৯৮২ সালে এনাম কমিশনের তৈরি করা সরকারি অরগানোগ্রাম এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে। অনেক সংস্থা অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে, আবার নতুন অনেক সংস্থা গঠিত হয়েছে। এ অবস্থায় অরগানোগ্রাম পুনঃগঠন জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, “জনপ্রশাসন সংস্কার ছাড়াও এনবিআর সংস্কারে দুটি ভিন্ন কমিশনের কাজের ফলে সমন্বয়হীনতা তৈরি হয়েছে।”
বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশনের প্রতিনিধি এমদাদুল হক বলেন, “রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগের জন্য যে কমিশন গঠন করা হয়েছে, তা যেন স্বচ্ছভাবে কাজ করে, সে নিশ্চয়তা দিতে হবে।”
এদিকে দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রতিনিধি ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “প্রাথমিকভাবে গঠিত ছয়টি কমিশনের বাইরেও গণমাধ্যম, শ্রম, স্থানীয় সরকার, নারী ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ বাস্তবায়নে একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ প্রণয়ন করতে হবে।”
নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার ২০০৮ সালে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য প্রণীত খসড়া প্রস্তাবটি অধ্যাদেশ আকারে প্রকাশ করার আহ্বান জানান।