ববি প্রতিনিধি
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও সমন্বয়কারীদের উপর হামলা চালিয়েছেন ববিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় ছাত্রী সহ আহত হয়েছেন ১৫ জন।
সোমবার(২৯ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে কোটা সমন্বয়কারী মিটিং এর জন্য একত্রিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপস্থিতিতে এ হামলা করে ছাত্রলীগ পরিচয়ধারী লোকজন।
জানা যায়, ছাত্রলীগ পরিচয়ধারী নেতা একে আরাফাতের নেতৃত্বে আইন বিভাগের ৭ম ব্যাচের শিক্ষার্থী মাহামুদুল হাসান তমাল, ভূতত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের ৭ম ব্যাচের শিক্ষার্থী আল সামাদ শান্ত ও খালেদ হাসান রুমি, অর্থনীতি বিভাগের ৭ম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাইফ, বাংলা বিভাগের ৮ম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন, একাউন্টটিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ৮ম ব্যাচের শিক্ষার্থী শরীফুল ইসলাম ওরফে শরীফ, আইন বিভাগের ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহারিয়ার সান ও জাইফ মিলে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদেরকে ক্যাম্পাসে গেলে হাত পা কেটে ফেলার হুমকি দেন
জানা যায়, সকাল এগারোটায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পরবর্তীত কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করে কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এ সভার কথা শুনেই সকাল ১০ টা থেকে ক্যাম্পাসের চারটি প্রধান গেইটে পুলিশ সেনাবাহিনীকে অবস্থান নিতে দেখা যায়। আন্দোলনকারীরা এসময় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের -০১ এর নিচ তলায় অবস্থান নেন। এসময় কোনো গেইট দিয়ে শিক্ষার্থীদের ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়নি যৌথ বাহিনী। এদিকে পরিচয়ধারী ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে জড়ো হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে ভিতের ঢুকে যান। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সামনেই লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করেন শিক্ষার্থীদের উপর।
এ ঘটনায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সুজয় বিশ্বাস শুভ, ভৌমিকা সরকারসহ আরো আটজন আহত হন। আহত শিক্ষার্থীদের শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সমন্বয়কারী সুজয় সুভ বলেন, গত পরশু দিন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা একটা সংবাদ সম্মেলন করে কতিপয় মিডিয়া এই সংবাদ সম্মেলনের তথ্যকে বিকৃতি রুপে প্রকাশ করে সারাদেশসহ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলে। সে ব্যাপারে পরবর্তীতে সঠিক সিন্ধান্ত নেওয়ার জন্য আমরা সমন্বয়কারীরা ভার্সিটির গ্রান্ড ফ্লোরে মিটিং এ বসছিলাম। এমতাবস্থায় ছাত্রলীগের একদল গ্রুপ আমাদের উপর আতর্কিত হামলা চালায়।
বরিশাল নগর পুলিশের বন্দর থানার ওসি আবদুর রহমান মুকুল বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের মিটিং শেষ দিকে ছিল। তখন কোটা সংস্কার নিয়ে সরকারের প্রজ্ঞাপনকে সমর্থন জানানো কিছু শিক্ষার্থী গেট দিয়ে প্রবেশ করে। তখন কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থী ও অন্য এক গ্রুপের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তারা ছাত্রলীগ কি না, তা বলতে পারব না, তবে তারাও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা অভিযুক্ত একে আরাফাতের মোবাইল নম্বরে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। এদিকে রোববার কোটা সংস্কার আন্দোলনের অংশ হিসেবে আন্দোলনকারীরা ক্যাম্পাসে গ্রাফিতি অঙ্কন করতে গেলে হামলার উদ্দেশ্যে জড়ো হয়েছিলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা- এমন অভিযোগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
এদিকে সার্বিক বিষয়ে ববি প্রক্টর ড. আব্দুল কাইয়ুমকে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই।