বিডিটাইম ডেস্ক
মিয়ানমারকে কোনো করিডর বা চ্যানেল দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, “বাংলাদেশকে ফ্রন্টলাইনের দিকে নিয়ে যাবেন না। এটা আমাদের অস্তিত্ব ও নিরাপত্তার প্রশ্ন।”
শনিবার (৩১মে) বিকেলে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক নিরাপত্তা: প্রেক্ষিত মানবিক করিডর’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি। এই বৈঠকের আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যানালিসিস।
আমীর খসরু বলেন, করিডর বা চ্যানেল দেওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের এখতিয়ারেই পড়ে না। “অনেকে বলেছেন চিফ অ্যাডভাইজার সাহেব বলুক, বিষয়টা কী। আমরা এখনো নিশ্চিত না যে এটি বন্ধ হয়ে গেছে।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, “কোন অর্জনের জন্য এত বড় ঝুঁকি নিচ্ছেন আপনি?”
তিনি জানান, করিডর নিয়ে বিতর্কিত অবস্থার পর সরকার ‘চ্যানেল’ শব্দ ব্যবহার করলেও এর মধ্যে কৌশলগত পার্থক্য রয়েছে। “চ্যানেল বা করিডর—যাই বলা হোক, বাস্তব প্রেক্ষাপটে এগুলোর তাৎপর্য একইরকম। এর মধ্যে গোপনীয়তার কিছু নেই।”
আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় মিয়ানমারে বর্তমানে চীন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ জড়িত বলে উল্লেখ করেন বিএনপির এই নীতিনির্ধারক। তাঁর আশঙ্কা, করিডর দিলে বাংলাদেশ কোনো ছায়াযুদ্ধ বা বৈশ্বিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার ময়দানে পরিণত হতে পারে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের যুক্তিতে করিডর দেওয়ার বিরোধিতা করে আমীর খসরু বলেন, “রোহিঙ্গারা করিডর দিয়ে নয়, সম্মান ও আইনি প্রক্রিয়ায় মিয়ানমারে ফেরত যাবে। এটা তাদের নাগরিক অধিকার।”
তিনি আরও বলেন, “শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকার জন্য রাষ্ট্রীয় স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়েছেন। করিডর কিংবা চ্যানেল—কোনোটিরই সুযোগ নেই।”
গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যানালিসিসের নির্বাহী পরিচালক কর্নেল (অব.) মো. জগলুল আহসান। তিনি মূল প্রবন্ধে বলেন, “এ ধরনের সিদ্ধান্ত সংসদহীন পরিস্থিতিতে সরকারের এককভাবে নেওয়া ঠিক হবে না। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মো. কামরুজ্জামান, সাবেক রাষ্ট্রদূত শাহিদুল হক, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, জাপার হুমায়রা নূর, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, সাংবাদিক এম এ আজিজ প্রমুখ।