যবিপ্রবি প্রতিনিধি
ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের নৈরাজ্য বন্ধ, বিএসসি প্রকৌশলীদের প্রতি বৈষম্য নিরসন এবং তিন দফা দাবিতে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিক্ষোভ মিছিলটি স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে যবিপ্রবির বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন, যেমন—
“যোগ্যতার মূল্যায়ন চাই, উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে বিএসসি চাই”, “উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে অবিচার, এবার চাই ন্যায়বিচার”, “ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে চাই মেধার জয়, বৈষম্যের হবে পরাজয়”, “আমাদের অঙ্গীকার, প্রকৌশলীর অধিকার”, “প্রকৌশলীর সকল পদ, শুধুই প্রকৌশলীদের অধিকার”, “কোটার নামে অবিচার, চলবে না, চলবে না”, “উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে ন্যায় চাই, বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারের অধিকার চাই”, “এ মুহূর্তে দরকার প্রকৌশল খাতের সংস্কার”, “মেধার মর্যাদা রক্ষা করো, রক্ষা করো”, “কোটার নামে অবিচার, বন্ধ করো, বন্ধ করো”, “চাকরির বাজার মুক্ত চাই, কোটার নামে শোষণ নাই” ইত্যাদি।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা যে তিন দফা দাবি উপস্থাপন করেন, তা হলো—
১. ইঞ্জিনিয়ারিং ৯ম গ্রেডে সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং প্রার্থীকে বিএসসি ডিগ্রিধারী হতে হবে।
২. কোটার মাধ্যমে কোনো প্রকার পদোন্নতি দেওয়া যাবে না, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ তৈরি করেও নয়।
৩. টেকনিক্যাল ১০ম গ্রেডে উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে ডিপ্লোমা ও বিএসসি উভয় ডিগ্রিধারীর জন্য সমানভাবে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ উন্মুক্ত করতে হবে। পাশাপাশি, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি ছাড়া কেউ “ইঞ্জিনিয়ার” পদবি ব্যবহার করতে পারবে না—এই মর্মে আইন পাশ করে গেজেট প্রকাশ করতে হবে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, “বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের পক্ষ থেকে আমরা দীর্ঘদিন ধরে চলমান বৈষম্যের অবসান এবং মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মক্ষেত্রে ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি। জুলাই আন্দোলন হয়েছিল কোটার নামে বৈষম্য দূর করার জন্য, কিন্তু সেই আন্দোলনের পরেও নতুন করে কোটার মাধ্যমে বৈষম্য সৃষ্টি করে দেশকে মেধাহীন করার পায়তারা করা হচ্ছে। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা অনার্স লেভেলের চেয়েও কম শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে কোটার মাধ্যমে সরাসরি ১০ম গ্রেডে চাকরি পাচ্ছেন এবং সেখান থেকে ৩৩–৭০ শতাংশ কোটায় ৯ম গ্রেডে প্রমোশন নিচ্ছেন।”
সমাবেশে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডীন মো. আমজাদ হোসেন ড. ইঞ্জি. বলেন, “যেসব শিক্ষার্থী এখানে আন্দোলন করছে, আমি তাদের দাবির সাথে একমত। ১০ম গ্রেডে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে, কারণ তারা অবশ্যই এর যোগ্য। পাশাপাশি, ৯ম গ্রেডে প্রমোশন না দিয়ে পরীক্ষার মাধ্যমে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে।”