বিডিটাইম ডেস্ক
মোংলা সমুদ্রবন্দরে অবস্থানরত বাণিজ্যিক জাহাজ এম ভি সেঁজুতি থেকে ‘ডাকাতি হওয়া’ মালামালের কিছু অংশ উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ।
একইসঙ্গে ডাকাতির পরিকল্পনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে জাহাজটির প্রধান প্রকৌশলী মো. সিরাজুল হকসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
আটক অন্য দুই ব্যক্তি হলেন পেশাদার ডাকাত সুমন হাওলাদার (২১) এবং লুট হওয়া মালামালের ক্রেতা মো. গুমন হোসেন (৩০)। বর্তমানে তাদের মোংলা থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে কোস্ট গার্ড।
এদিকে কোস্ট গার্ডের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, নাবিকদের ৬-৭ মাস ধরে বেতন না দেওয়ায় মালিকপক্ষের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন জাহাজের কর্মীরা। এই ক্ষোভ থেকেই প্রধান প্রকৌশলী স্থানীয় দুষ্কৃতকারীদের সহযোগিতায় ডাকাতির একটি নাটক সাজান, এবং মূল্যবান যন্ত্রাংশ বিক্রির মাধ্যমে অর্থ ভাগাভাগির পরিকল্পনা করেন।
মোংলা কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশনস কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবরার হাসান বুধবার দুপুরে জানান, উদ্ধারকৃত মালামালের মধ্যে রয়েছে ইঞ্জিনের স্পেয়ার পার্টস, বিভিন্ন সাইজের বিয়ারিং, ব্যাটারি, চার্জার এবং জাহাজের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ।
তিনি আরও বলেন, “এই জাহাজের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ আগেও ডাকাতদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। তদন্তে দেখা যাচ্ছে, এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা। মালিকপক্ষের উদাসীনতা ও দীর্ঘদিন ধরে জাহাজটিকে পরিত্যক্ত অবস্থায় রাখার সুযোগেই এই নাটক সাজানো হয়েছে।”
এর আগে সোমবার (২৬ মে) এক লিখিত বিবৃতিতে প্রধান প্রকৌশলী সিরাজুল হক দাবি করেন, রবিবার দিবাগত রাত ২টা ৪৫ মিনিটে দেশীয় অস্ত্রধারী একদল ডাকাত জাহাজে হানা দেয় এবং সব কর্মীদের রশি দিয়ে বেঁধে রেখে ইঞ্জিনরুমসহ বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
তবে তদন্তে জানা গেছে, এই বিবৃতিটি আসলে ঘটনা আড়াল ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর কৌশল ছিল। উদ্ধার হওয়া মালামাল জাহাজ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানানো হয়।
কোস্ট গার্ডের কর্মকর্তারা মনে করছেন, শুধুমাত্র আটক ব্যক্তিদের নয়, জাহাজ মালিকপক্ষের ভূমিকা এবং দায় নিয়েও তদন্ত হওয়া জরুরি। দীর্ঘদিন ধরে বেতন না দেওয়া এবং জাহাজকে অনিরাপদ অবস্থায় ফেলে রাখার বিষয়গুলোও গভীরভাবে দেখা প্রয়োজন।