Top 5 This Week

শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার প্রতি বিমুখতা এবং সাম্প্রতিক বিবেচনা

ছবি সংগৃহিত

আমরা এখন প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে জীবন অতিবাহিত করছি। একজন মানুষের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো সময় এবং কাজ। মানুষের বয়স এবং সময়ের উপর নির্ভর করে সে কখন কি কাজ করবে। যেমন ছোট বেলায় একজন শিশুর সবচেয়ে বড় লক্ষ্য হলো নিজে নিজে হাঁটাচলা করা, এর পরে কথা বলা। সময়ের বিবেচনায় পরে তাকে যেতে হয় স্কুল। তাহলে বুঝা যায় সময়ের কাজ সময়ে করতে হয় বা করা প্রয়োজন। এখন দেখা যায় আমরা নিজেদের কাজের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করছি।

যেমন আমাদের সমাজের ১২-১৮ বয়সের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়াশোনা প্রবণতা কমে যাচ্ছে। তারা যেন পড়াশোনায় মন দিতে পারছে না। বিশেষ করে গ্রামের শিক্ষার্থীদের এমন অবস্থা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যেখানে আমরা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে এগিয়ে যাওয়ার কথা সেখানে এর বিপরীত হচ্ছে কেন! কি এমন বিষয় আমাদের সমাজের শিক্ষার্থীদের তাদের লক্ষ্য থেকে বিচ্ছেদ করে দিচ্ছে? এবিষয় গুলো পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র কেউ দায় এড়াতে পারে না। মানুষের জীবনে প্রথম বিদ্যালয় হলো তার পরিবার, এখান থেকে সে নৈতিকতা শিখবে, ভালো আচরণ শিখবে, মানুষকে সম্মান দেওয়া শিখবে ইত্যাদি। এর পরে আসবে সমাজ। মানুষের কথা যেখানে আসবে সেখানে সমাজের কথাও আসবে।

সমাজ যেমন মানুষ থেকে কিছু আসা করে ঠিক একই ভাবে মানুষও সমাজ থেকে কিছু আসা করে। জনৈক মনীষী বলেছেন, মানুষের জীবনকে দু’ তলা ঘরের সাথে তুলনা করা যায়। উপরের তলা তার নিজের চেষ্টা আর নিচের তলা হলো সমাজের কাজ। সমাজ তাকে কতটুকু নিচের থেকে উপরে উঠতে সহায়তা করছে। সে যদি সমাজ থেকে ভালো কিছু পায় তাহলে সমাজও তার থেকে কিছু আশা করে। এখন আমরা বলতে পারি স্কুল – কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা। একথা সবাই জানে আমাদের জীবনের প্রায় অনেক সময় শিক্ষার মধ্যে কাটাতে হয়। সেখানে আমাদের যেতেই হবে। কিন্তু এখন স্কুলের দিকে শিক্ষার্থীদের প্রবণতা কমে যাচ্ছে। করোনা মহামারির পরের বছরগুলোতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়াশোনা প্রতি আগ্রহ কমে গেছে বিশেষ করে গ্রামে মধ্যে বেশি এটি দেখা যায়। উন্নত প্রযুক্তির অপব্যবহার আমাদের শিক্ষার্থীদের এমন ফল দিচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে না আছে পড়াশোনার আগ্রহ, না আছে নৈতিক শিক্ষা। সমাজের খারাপ কাজগুলোর মধ্যে তারা নিজেদের যুক্ত করছে। এমন করে শেষ হয়ে যাচ্ছে তরুণের একটি দল। তাদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আলোর পথে নিয়ে আসতে হবে। তাদের নিয়ে কাজ করতে হবে। ভালো মানুষদের সাথে তাদের সময় দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে আছে। সমাজের এমন একটা তরুণের দলের বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ জন্য জাতি অচিরেই যুগের একটা ধাপ থেকে সরে যাচ্ছে। এদেরকে ভালো কাজের সাথে রাখা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের পড়াশোনা প্রতি আগ্রহী করে তুলতে হবে। তাদের নিয়ে কাজ করার সময় হয়েছে। নাহলে আমরা হারিয়ে ফেলবো জাতির একটি দলে, একটি প্রজন্ম।

লেখক: সাবের হোসেন সৌরভ

শিক্ষার্থী নৃবিজ্ঞান বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles

en_USEnglish