Top 5 This Week

স্মার্ট ক্যাম্পাস তৈরিতে শিক্ষার্থীদের সমস্যা নিয়ে বাকৃবি ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভা 

বাকৃবি প্রতিনিধি:

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শাখা ছাত্রলীগের আয়োজনে “স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে, স্মার্ট ক্যাম্পাস, স্মার্ট কর্মসংস্থান” শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেল ৫ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিনি কনফারেন্স কক্ষে ঐ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

মতবিনিময় সভায় বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সমস্যা ও শিক্ষার্থী বান্ধব পরামর্শগুলো বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে তুলে ধরেন।

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদ এবং সঞ্চালনা করেন বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মেহেদী হাসান। এছাড়াও ছাত্রলীগের হল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় নেতা-কর্মীরা তাদের বিভিন্ন মতামত তুলে ধরে বলেন,  তরুণ সমাজকে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে এগিয়ে নিতে হলগুলোতে আইসিটি ল্যাব স্থাপন প্রয়োজন। গেস্ট রুম নিয়ে বিভিন্ন ইস্যু হওয়ার কারণে এখন আর গেষ্টরুম তেমন হয় না। তাই তরুণ প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানানোর সুযোগ কমে গেছে, তাই আবাসিক হল লাইব্রেরিগুলোতে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত বইগুলো বেশি রাখা উচিত। স্মার্ট ক্লাসরুম দরকার, যেখানে ক্লাসের প্রয়োজনীয়  সকল স্মার্ট জিনিসপত্র থাকবে। সমসাময়িক বিষয়ে জানার জন্যে মাসে মাসে বিতর্ক সভার  আয়োজন করা প্রয়োজন। ছাত্রলীগের সদস্যদের জন্যে স্মার্ট কার্ড তৈরি করলে পরবর্তীতে নিজের পরিচয় দেওয়া সহজ হবে। কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে কম্পিউটার বিষয়ে একটি কোর্স অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। তাহলে শিক্ষার্থীরা কম্পিউটারের বেসিক বিষয়গুলো শিখতে পারবে।

তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিয়ে বলেন, নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা জোরদার করণে প্রয়োজন হটলাইন সেবা, যার মাধ্যমে কোনো নারী শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের বাইরে থাকলে তারা তাৎক্ষণিকভাবে সেবা পাবে। চুরির পর নিরাপত্তা শাখা থেকে বলা হয় সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো নষ্ট।  এই দায়ভার ছাত্ররা নিবে না। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে হবে এবং এখানে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে।

এছাড়াও টিএসসিতে টয়লেটগুলোর সংস্কার করা, আবাসিক হলে মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যে

কাউন্সিলিং, হেলথকেয়ার সেন্টারে অ্যাম্বুলেন্স  বৃদ্ধি ও দক্ষ ডাক্তার নিয়োগ, ক্যাম্পাসের ভারী যানবাহন ও বহিরাগত নিয়ন্ত্রণ, হলের ওয়াইফাইয়ের মানোন্নয়ন, স্মার্ট বাস সার্ভিস চালু করা, পরিবেশ রক্ষায় নবনির্মিত ভবনগুলোতে এসির ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে ভিন্ন পন্থা অবলম্বন,  বাকৃবি ছাত্রলীগের ওয়েবসাইট তৈরি, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যে আলাদা রিকশা ব্যবস্থা চালু, উন্নয়নের নামে বৃক্ষনিধন বন্ধ করা এবং নিয়মিত কনভোকেশন করে যথাসময়ে মূল সনদপত্র প্রদানের ব্যবস্থা করাসহ নানান বিষয়ের বিদ্যমান সমস্যাগুলো তুলে ধরেন।

নেতাকর্মীদের উপস্থাপিত সমস্যাগুলোর উত্তরে বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেন,  শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে এখানে যেসকল সমস্যা ও পরামর্শ গুলো উঠে এসেছে সেগুলো আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে সমাধান করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তবে যেগুলো অতি জরুরি সেগুলো দ্রুত সমাধান করা হবে।

মো. মেহেদী হাসান বলেন, আজকের সমস্যাগুলো নিয়ে যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য,  ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা এবং প্রক্টর স্যারসহ  আমরা ৫ জন মিলে আলোচনা করি তাহলে আমার মনে হয় অর্ধেক সমস্যা এখানে সমাধান হয়ে যেতো। এখানে যে সমস্যা গুলো উঠে এসেছে তার বেশির ভাগই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সমাধান করবে। এক্ষেত্রে আমরা স্মারক আকারে সমস্যাগুলো উপাচার্য স্যারকে দিতে পারি। অনুষদভিত্তিক সমস্যাগুলো আপনারা যদি অনুষদীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে তুলে ধরতেন  তাহলে তারাই আমাদের সাথে সমন্বয় করে বিষয়গুলোর সমাধান করতে পারতো। পরবর্তীতে আমরা প্রত্যেক হলে হলে সভার আয়োজন করার ব্যবস্থা করবো যেন হলের সমস্যাগুলো হলেই সমাধান হয়।

হেলথকেয়ারের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে তিনি বলেন, সামনে হেলথকেয়ারের ডাক্তার নিয়োগের কথা রয়েছে। নিয়োগ হলে স্বাস্থ্যসেবার  মান উন্নত হবে বলে আশাবাদী। অ্যাম্বুলেন্স প্রাপ্তির ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হলে আমাদের জানালে তাৎক্ষণিকভাবে সেটির বিষয়ে ব্যবস্থা নিবো।

খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদ বলেন, স্মার্ট ক্যাম্পাস তৈরির লক্ষে প্রত্যক হলে হলে শেখ রাসেল কম্পিউটার ল্যাব করা হবে। সেখানে তথ্য প্রযুক্তিরও সকল সুবিধা থাকবে।  আমরা গতকাল পরিকল্পনা বিভগের পরিচালকের সা‌থে কথা ব‌লে‌ছি  ২০২২ সালের টেন্ডারে হ‌লের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য এবং যে হ‌লের কাজ একদমই শুরু হয়‌নি তা বন্ধ করার জন্য। পরবর্তী টেন্ডা‌র হওয়ার পর তা শুরু করার  জন্য তারা আমা‌দের এই ব্যাপারে আশস্ত ক‌রে‌ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রোজী জামাল হল ছাত্রলীগের অর্জন। সেখানে এখন অনেক নারী শিক্ষার্থীরা থাকছেন। ওই হলে আরও ভবন নির্মাণের কাজ চলমান। সেটি শেষ নারী শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমবে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান শিক্ষার্থী‌দের ক্রয় ক্ষমতা বে‌ড়ে‌ছে, তাই অনেকই ডাইনিং বাদ দিয়ে বাইরে খাবার খায়। অ‌নে‌কে ভ্রান্ত ধারণার কার‌ণে হ‌লে খে‌তে চায় না। বাস্তবে হ‌লের খাবা‌র, বা‌হি‌রের হো‌টে‌লের থে‌কে অ‌নেক স্বাস্থ্যকর। বিশ্ব‌বিদ্যালয়ে আই‌সি‌টি খাত এক‌টি অলাভজনক খাত। যে হ‌লে ১০‌টি রাউটার থাকার কথা সেখা‌নে শিক্ষার্থীরা ১০০ টির ম‌তো রাউটার ব্যবহার কর‌ছে। যার ফ‌লে হ‌লে ইন্টার‌নেট সেবা একটু দুর্বল। প্রশাসন বাইরের একটি কোম্পানিকে ইন্টারনেট সেবার দায়িত্ব দিতে পারে এতে করে বিশ্ববিদ্যালয় লাভবান হবে এবং শিক্ষার্থীরা কাঙ্খিত সেবা পাবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles

en_USEnglish