Top 5 This Week

কুবি মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসা বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা, সার্বক্ষণিক চালু রাখার দাবি

কুবি প্রতিনিধি :

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। সপ্তাহে ৫দিন সাত থেকে আট ঘন্টা মেডিকেল সেন্টার খোলা থাকলেও নিয়মিত ডাক্তার থাকেন না। পাওয়া যায় না প্রয়োজনীয় ঔষুুধও। এতে সেবা নিয়ে  অসন্তোষ শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি ২৪ঘন্টা মেডিকেল সেন্টার খোলা রাখার ব্যবস্থা করা এবং প্রয়োজনীয় ঔষুধ সরবরাহ করা।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী আবাসিক হল ও ক্যাম্পাসের আশেপাশে বসবাস করেন। বিভিন্ন সময় কেউ নিম্ন রক্তচাপ, কেউ উচ্চ রক্তচাপ, কেউ রক্তশূন্যতা, জ্বর-ঠান্ডা, কাশি, গ্যাস্ট্রিকাহ নানা সমস্যা হলে মেডিকেলে যখন তখন সেবা পাওয়া যায় না। এছাড়া আশেপাশে কোন হাসপাতাল না থাকায় অসুস্থ হয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীদের  চিকিৎসার একমাত্র ভরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার। হঠাৎ শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাৎক্ষণিক কোনো চিকিৎসা পায় না। ফলে স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে,  সকাল নয়টা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত মেডিকেল সেন্টারে ডাক্তার থাকেন।  কখনো মেডিকেল সেন্টার খোলা থাকলেও প্রায়ই ডাক্তার থাকেন না। ডাক্তার থাকলেও যেসব ওষুধ দিয়ে থাকেন সেগুলো মেডিকেল সেন্টার থেকে সরবরাহ করা হয় না। ফলে ক্যাম্পাস ও  শহর থেকে ঔষুধগুলো ক্রয় করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত সেবা না পাওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের দূরত্ব প্রায় ১১ কিলোমিটার। কলেজ হাসপাতালে যাওয়া সময় সাপেক্ষেও বটে। সাথে যানজটতো রয়েছেই। ফলে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

মারুফ আহমেদ নামে  এক শিক্ষার্থী জানান, আমাদের মেডিকেল সেন্টার খোলা থাকে মাত্র সাত ঘণ্টা যা শিক্ষার্থীদের জন্য অপর্যাপ্ত। দেখা যায় কেউ ৯ টার আগে কিংবা বিকাল ৪ টার পর অসুস্থ হলে তাকে শহরের হাসপাতালগুলোতে নিয়ে যেতে হয় যা সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল। রাতে কেউ অসুস্থ হলে অ্যাম্বুলেন্স সেবার জন্য অপেক্ষা করতে হয়।

তিনি আরও বলেন, বন্ধের দিনগুলোতে মেডিকেল সেন্টার বন্ধ থাকায় কেউ অসুস্থ হলে কোন উপায় না পেয়ে শহরমুখী হতে হয় আর তাও প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে। ইমারজেন্সি সেবা পাওয়া হয়ে পড়ে দুঃসাধ্য। আমাদের মেডিকেল সেন্টারে সেবার মান উন্নত করা এবং মেডিকেল সেন্টারের সার্বক্ষণিক একজন দায়িত্বরত চিকিৎসক অবস্থান করা জরুরি  বলে মনে করছি।

নুসরাত জাহান নামে এক নারী শিক্ষার্থী বলে,
আমরা যে কোন সময় অসুস্থ হতেই পারি। অথচ  আমাদের মেডিকেল খোলা থাকে সকাল  নয়টা থেকে বিকাল চারটা। মাঝে মাঝে  ধরা বাধা সময়ে গিয়েও ডাক্তার পাওয়া যায় না।  বিশ্ববিদ্যালয় শহর থেকে দূরে হওয়ায়  কখনো বিকালে বা রাতে আমরা  অসুস্থ হলে প্রাথমিক চিকিৎসাটুকুও পাই না। কেননা  আমাদের আশেপাশে এমনকি কোটবাড়িতেও কোনো হসপিটাল নেই। ফলে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে আমাদের নানা বিড়ম্বনাতে পড়তে হয়। যেহেতু চিকিৎসা আমাদের মৌলিক চাহিদা। তাই আমি চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সার্বক্ষণিক খোলা রাখার। একই সাথে  একজন কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ২৪ ঘন্টা যাতে আমাদের  সেবা দিতে পারেন সে ব্যবস্থা করা।

জানতে চাইলে ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার মাহমুদুল হাসান খান বলেন, আমরা সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৪ টা অবধি সেবা প্রদান করি। এছাড়াও ২৪ ঘন্টাই আমরা অনলাইনে সেবা প্রদান করে থাকি। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের  উপাচার্য রাত ৮ টা অবধি মেডিকেল সেন্টারে ডাক্তার রাখার ব্যবস্থা করতেছেন, যা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এ ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, আমরা খুব শীঘ্রই রাত ৮ টা পর্যন্ত ডাক্তার রাখার ব্যবস্থা করতেছি। সর্বক্ষণ ডাক্তার রাখার প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, এটার অনুমতি আমাদের নেই। শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার জন্য আমরা যেসব যন্ত্র এনেছি  সেগুলো ব্যবহার করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও এসব করার জন্য আমাদের অর্থের প্রয়োজন, ইউজিসি থেকে আমাদের অর্থ সহায়তা না দিলেও নিজ অর্থায়নে করার চেষ্টা করবো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles

en_USEnglish