Top 5 This Week

মধ্যরাতে ছাত্রীদের চা খেতে ডাকেন শিক্ষক

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

জাতীয়  কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহা বিরুদ্ধে মধ্যরাতে নারী শিক্ষার্থীদের চা খাওয়া ও অশোভন ইঙ্গিতে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

রবিবার (৩ মার্চ) ভুক্তভোগী মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তর প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সৈয়দা সানজানা আহসান ছোঁয়ার ফেসবুক  পোস্টের মাধ্যমে এই অভিযোগ করেন।  তিনি পোস্টে লিখেন, সাজন সাহা মধ্যরাতে আমাকে চা খেতে যাওয়ার প্রস্তাব করে।

এছাড়াও বিভিন্নভাবে নিজ কক্ষে ডাকতেন আমাকে । তবে সাড়া না পেয়ে রাগের বশবর্তী হয়ে একাডেমিক রেজাল্টে এই  প্রভাব পড়ছে বলে অভিযোগ করেন। শুরু করছে।

এমন ঘটনার সত্যতা জানতে ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলেন বিডিটাইমের সংবাদদাতা।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকেই নানা মেসেজ পেয়ে আসছিলেন সাজন সাহার কাছ থেকে। তবে ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর দিবাগত রাত ১.৩৩ মিনিটে “আসেন চা খাই” বলে মেসেজ করেন। এমন প্রস্তাবে আমি না করে দিই। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সময় আমাকে ম্যাথ দেখানোর জন্য রুমে ডাকতেন।

কিন্তু আমি সেইসব ইগনোর করতাম। এর পর থেকেই তিনি তার প্রভাব দেখানো শুরু করেন এবং উনার কোর্সগুলোতে আমাকে সর্বনিম্ন নাম্বার দিতেন। অসুস্থতার দরখাস্ত দেবার পরও উনার কোর্সে আমায় জরিমানা করেন।

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি অসুস্থতার কারণে আমি কোমায় চলে যাই। এসব কিছুর ডকুমেন্টস দেখালেও আমায় লাস্ট সেমিস্টারে জরিমানা করেন তিনি এবং আমার প্রবেশপত্র আটকে হেনস্তা করেন। আমার ইন্টার্নশীপের রিপোর্টের টপিক তিনি ৪ বার চেঞ্জ করেন।

ইন্টার্নশীপ চলাকালে ৩ মাস তিনি আমার ফোন ধরেননি এবং চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দেয়ার সময় তিনি বলেন তিনি আমাকে এই টপিকে রিপোর্টই করতে বলেননি। এভাবে আমি হেনস্তার শিকার হয়ে আসছি।

অভিযোগ জমাদেয়া বিষয়ে তিনি বলেন, আমি উপাচার্য, প্রক্টর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর ইমেইলে অভিযোগ পাঠিয়েছি।

এর আগে বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকে জানালে তিনি কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে বরং গোপন রাখতে বলেন।

এদিকে ভুক্তভোগীর এমন পোস্টের পর আরও অনেক শিক্ষার্থীর সাথে সাজন সাহার করা এমন কথোপকথনের স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়তে থাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

যেখানে দেখা যায় শাড়ি পরে দেখা করতে বলা, ইনবক্সে ছবি চাওয়া, রিকশা নিয়ে ঘুরতে যাওয়া, ক্যাম্পাসের বাইরে রেস্টুরেন্টে যাওয়ার নিমন্ত্রণ, ম্যাসেঞ্জারে অন্তরঙ্গ ভিডিওর লিংক শেয়ার করার মতো নানান অভিযোগ।

আবার সেইসব কথোপকথনের ছবি প্রিন্ট করে পুরো ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় লাগিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়কে কেন্দ্র করে  (৪ মার্চ) প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে মানববন্ধন করেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এসময় তারা সাজন সাহাকে চাকরি থেকে অপসারণ চেয়ে ৬ দফা দাবি জানান এবং উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।

বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্র বলেন, বিষয়টি শোনার পর আমি ছোঁয়াকে ইন্টার্নশিপ রিপোর্ট তৈরির বিষয়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দেই।

কিন্তু হঠাৎ অসুস্থ হওয়ায় আমি বিভাগে কয়েকদিন আসতে পারিনি। আমার কাছে শিক্ষার্থীদের গুরুত্ব সবার আগে। অপরাধ করলে দোষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

এ ঘটনা সম্পর্কে উপাচার্য বলেন, ঘটনাটি খুবই বিব্রতকর। ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ এখনো হাতে পাইনি। আমি তার সাথে কথা বলেছি আগামীকাল সে দেখা করবে। তবে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাজন সাহার বক্তব্য পাওয়া যায় নি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles

en_USEnglish