নাজমুস সাকিব
সাংবাদিককে বলা হয় জাতির বিবেক বা দর্পন। যাদের মাধ্যমে সমাজ, রাষ্ট্র, দেশ সবকিছু দেখে। কিন্তু সেই দর্পনে যদি ঝাপসা দেখা যায় তাহলে সবকিছু ঝাপসা মনে হবে। এক সময়ে গ্রামে বা মফস্বলে সাংবাদিক এবং সংবাদপত্র নিউজ পোর্টালের মূল্যায়ন ছিল আকাশ ছোঁয়া। তবে তা কালের বিবর্তনে হারিয়ে এখন হাসির পাত্রে পরিণত হচ্ছে সাংবাদিকরা।
মফস্বল মানুষের অভিযোগ, মফস্বলের সাংবাদিক মানে ভুমিদূস্য, চাঁদাবাজী, রাজনৈতিক নেতার গোলাম, সরকারি দলের নেতা, আরও অনেক বিশেষণে বিশেষায়িত করে তারা। এক কথায় সমাজের নিকৃষ্ট মানুষ বলতে সাংবাদিকরাই।
তারা আরও অভিযোগ করে বলেন , সাংবাদিকরা কি সাংবাদিকতা করবে! দেশের অধিকাংশ গণমাধ্যমগুলো সরকার দলের, বিরোধী দলের যে কয়টা চ্যানেল ছিল সেগুলোও বন্ধ করে দিয়েছে।
মফস্বলে যারা সাংবাদিকরা করে তারা কেউ মোটরসাইকেল ড্রাইভার, এক সময়ের পত্রিকার হকার এখন সম্পাদক, আজেবাজে পোর্টালকে টাকা দিয়ে কার্ড করে পরিচয় দিচ্ছে সাংবাদিক কিন্তু ক্লাস এইটও পাশ করে নাই।
তবে মফস্বল সাংবাদিকরা বলেন ভিন্ন কথা, মফস্বলের প্রতি কেন্দ্রীয় মিডিয়া কোন মাথাব্যথা নেই। মফস্বলের সাংবাদিকের নেই কোন বেতন, যে বেতন দেওয়া হয় তা দিয়ে সিঙ্গেল মানুষও চলা সম্ভব না। শহরের সাংবাদিকদের যত সুবিধা পাওয়া যায় তা মফস্বলে নেই।
মফস্বলে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করলে পড়তে হয় দলীয় নেতাদের রোষানলে, টেন্ডারবাজি, মাদক কারবারি, টোলের নামে চাঁদাবাজি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দেওয়ার হুমকি দেয়, কেউ কেউ আবার হাত পা ভেঙে ফেলতে চায়, এমন হাজারো চাপে পড়তে হয় মফস্বলের সাংবাদিকদের।
মফস্বল সাংবাদিকতা নিয়ে সুশীল সমাজেরও রয়েছে ভিন্নমত, তারা বলেন, বর্তমানে মফস্বল সাংবাদিকরা সক্রিয় রাজনীতিতে, নেতৃত্ব দিয়ে করাচ্ছে শোডাউন, সাংবাদিকতার থেকে গুরুত্ব দিচ্ছে রাজনীতিকে।
মুনতাসীর সাংবাদিকদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, মফস্বলের সাংবাদিকরা এখন চাঁদাবাজী করে। ওখানে সাংবাদিকতা বলতে কিছু নাই ।
আরিফ খানের মতে, গণমাধ্যম শতকরা ৯০ভাগই মিথ্যে সংবাদ প্রকাশ করে, এমনকি টাকা নিয়ে সংবাদ ছাপার অভিযোগ ও রয়েছে ।
মফস্বলের এক সংবাদকর্মীর দুঃখ করে বলেন , দেশের গণমাধ্যমের কোনো স্বাধীনতা নেই। পাতি নেতা থেকে শুরু করে এমপি মন্ত্রীদের গোলাম হয়ে থাকতে হয় বর্তমানে।
কিন্তু আমি তখনই অবাক হয়ে যাই, দেখি শিক্ষিত সমাজকে নেতৃত্ব দিচ্ছে কিছু চাটুকাররা। এটা সমাজের অধপতনের ছাড়া কিছু না।
লেখক -শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ